দখিনের খবর ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকার সবার জন্য করোনার ভ্যাকসিন নিশ্চিত করবে। প্রথমদিকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকলেও এখন সবাই আগ্রহভরে টিকা নিচ্ছে। আমরা তিন কোটি ডোজ টিকা কিনে রেখেছি। তাছাড়া ভারত ২০ লাখ ডোজ দিয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দেশও দিতে চাচ্ছে আমরা সবগুলো নেব, যাতে আমরা গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সবার জন্য এই টিকার ব্যবস্থা করতে পারি।’ গতকাল গতকাল রোববার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কুমুদিনি ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলা করতে যা যা করা দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। ভ্যাকসিন দেওয়ার পরেও সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরে থাকতে হবে, হাত ধুতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছি পাশাপাশি যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষাটা মেনে চলি। তাহলে আমরা আশা করি আমাদের দেশ থেকে এই প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন রিসার্চ চলছিল তখন আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি এই কারণেই যেন শুরুতেই আমরা টিকাটা পেতে পারি। আমাদের অনেক ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। কাজেই আমাদের দেশের মানুষের সুরক্ষা তাছাড়া যারা চিকিৎসা দিচ্ছে বা মানুষের পাশে থাকছে অথবা বিভিন্ন শ্রেডু-পেশার মানুষ তাদের সবার সুরক্ষার জন্য টিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক ক্ষেত্রে পেছনে পড়ে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নার্সদের শুধু ডিপ্লোমা নার্সিং ছিল, গ্রাজ্যুয়েশন ছিল না। ‘৭৫ সালের পর ২১ বছর যারা সরকার পরিচালনা করেছিল একে তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল। তারপর ক্ষমতাটা তাদের কাছে ছিল একটা ভোগের বস্তু, নিজের ভাগ্য গড়ার বস্তু, দেশের মানুষের কল্যঠু করার কথা তারা কখনও চিন্তা করে নাই। এটাই হচ্ছে সব থেকে দুর্ভাগ্যের। আমরা সরকারে আসার পর থেকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রচেষ্টা চালাই।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছি। তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছি। প্রতিটি জেলায় সরকারি অথবা বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, মেডিক্যাল কলেজ করে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি। উন্নত মানের হাসপাতাল করে দিচ্ছি। ডাক্তার নার্স নিয়োগ দিয়েছি। যেন আমাদের দেশের মানুষ অন্তত এই চিকিৎসাটা পায়, তার ব্যবস্থা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা নেওয়ার ব্যাপারে অনেকের একটু দ্বিধা দ্বন্দ্ব ছিল। তবে সাহসী ভূমিকা রেখেছে আমাদের কুমুদিনী হাসপাতালে নার্স। এখন আর আমাদের কোনও সমস্যা নাই, এখন সবাই খুব আগ্রহভরে চলে আসছে, উৎসাহে চলে আসছে টিকা নিতে। তিনি স্বাস্থ্য সেবায় কুমুদিনী হাসপাতালের প্রশংসা করেন।’ মেডিক্যাল গবেষণা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে রিসার্সের সুযোগটা খুবই কম। বিশেষ করে মেডিক্যাল সায়েন্সের রিসার্স খুব বেশি একটা হচ্ছে না। যেটা হওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন। আসলে যাদের রিসার্স করার কথা সকলেই ডাক্তার হয়ে রোগী দেখতে এত ব্যস্ত, বসে রিসার্স- খুবই হাতে গোনা কয়জনকে আমি দেখি, তাদের পাবলিকেশন এবং রিসার্স করে।’ তিনি বলেন, ক্যানসার এমন একটা রোগ, আজকে এমন তার প্রার্দুভাব হচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্য তার যে প্রকৃত ডায়াগনোসিস করা বা সেভাবে আমাদেশের পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ুর সঙ্গে এই ক্যান্সার কিভাবে বিস্তার লাভ করে তার ওপর রিসার্স করা বা এটার চিকিৎসা করবার জন্য যে রিসার্স দরকার সেটা খুব কম আমাদের দেশে হয়। নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী কমপ্লেক্স প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপেরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ -৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা, পরিচালক শ্রীমতি সাহা।
Leave a Reply